গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা, খেজুর খাওয়ার সতর্কতা
আমরা অনেকেই জানি খেজুর একটি পুষ্টিকর ফল। এতে রয়েছে ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়ামসহ নানা উপকারী উপাদান। কিন্তু গর্ভাবস্থায় সব খাবার সমানভাবে নিরাপদ নয়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা।
যখন আপনি মা হতে চলেছেন, তখন যে খাবারটি আপনার জন্য ভালো—সেটি অতিরিক্ত হলে উল্টো ক্ষতিও করতে পারে। তাই আজকে আমি আপনাকে জানাবো, গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা, কোন ক্ষেত্রে খাওয়া নিরাপদ এবং কখন এড়িয়ে চলা উচিত।
গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রধান অপকারিতা
১. রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে
- খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি (Natural Sugar) অনেক বেশি। ফলে
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes)
- পূর্বের ডায়াবেটিস ইতিহাস
- থাকলে খেজুর অতিরিক্ত খেলে রক্তের গ্লুকোজ দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।
বিশেষ সতর্কতা: যদি আপনি ডায়াবেটিক হন, তাহলে প্রতিদিন ১–২টির বেশি খাবেন না, ডাক্তার অনুমতি ছাড়া নয়। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা।
আরো পড়ুনঃ শুকনো খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
২. অতিরিক্ত ফাইবারে পেটের সমস্যা
- হ্যাঁ ফাইবার উপকারী। কিন্তু গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ফাইবার
- গ্যাস
- পেট ব্যথা
- ডায়রিয়া
- হজমে সমস্যা
- তৈরি করতে পারে।
আপনি যদি আগেও গ্যাস বা অম্বল সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে খেজুর খুব বেশি খেলে সমস্যা বাড়তে পারে। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা।
৩. অতিরিক্ত ক্যালরি → অনিয়ন্ত্রিত ওজন বৃদ্ধি
- গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ওজন বাড়লে
- উচ্চ রক্তচাপ
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
- প্রসবের সময় জটিলতা
- হতে পারে।
- খেজুর ক্যালরি–সমৃদ্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত খেলে দ্রুত ওজন বাড়ে।
- তাই Control পরিমাণেই খাওয়া জরুরি।
৪. দাঁতের ক্ষতি হতে পারে
খেজুর আঠালো ধরনের। দাঁতের মধ্যে লেগে থাকে এবং প্রাকৃতিক চিনি বেশি। ফলে দাঁতে
- ক্যাভিটি
- ব্যথা
- ইনফেকশন
- হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হারমোনাল পরিবর্তনের কারণে দাঁতের সমস্যাও বাড়তে পারে, তাই খাওয়ার পর মুখ ধোয়া জরুরি। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা।
৫. অ্যালার্জির ঝুঁকি (দুর্লভ হলেও হতে পারে)
- অনেকের খেজুরে অ্যালার্জি হতে পারে। যেমন:
- ত্বকে ফুসকুড়ি
- চুলকানি
- চোখে পানি
- গলায় অস্বস্তি
- এগুলো দেখা দিলে খাওয়া বন্ধ করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কতটি খেজুর খাওয়া নিরাপদ
সাধারণভাবে
- প্রতিদিন ২–৩ টি খেজুর নিরাপদ
- যদি কোনো সমস্যা না থাকে।
- ডায়াবেটিস থাকলে
- ১–২ টি
- এবং ডাক্তারকে জানিয়ে।
- কারা খেজুর খাওয়া এড়িয়ে চলবেন
আপনার যদি নিচের যেকোনো সমস্যা থাকে—জন্য খেজুর সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত:
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
- অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি
- নিয়মিত গ্যাস/অম্বল সমস্যা
- পূর্বের অ্যালার্জি ইতিহাস
- দাঁতের সমস্যা
- গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার সময় কিছু টিপস
- খালি পেটে বেশি খাবেন না
- রাতে অতিরিক্ত খাবেন না
- প্রচুর পানি পান করুন
- দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করুন
- উচ্চ গ্লুকোজ রিপোর্ট থাকলে হঠাৎ বেশি খাবেন না
উপসংহার
খেজুর পুষ্টিকর এবং উপকারী হলেও গর্ভাবস্থায় সবকিছুর মতোই এটি পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। আপনি যদি সচেতনভাবে খেতে পারেন, তবে খেজুর শরীরকে শক্তি দেবে। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে উল্টো ক্ষতিও হতে পারে। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার অপকারিতা।


রোকন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url