পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম এর সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না আর সঠিক তথ্য পেতে এবং এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা দেখতে আরো নবীজির নামাজের নিয়ম এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম নবীজির নামাজের নিয়ম এর সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু জানতে নিচের আর্টিকেলগুলি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আশা করি এর সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু বুঝতে পারবেন।
পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম (পুরুষ ও মহিলাদের জন্য কিছু পার্থক্য আছে, এখানে সাধারণ নিয়ম দেওয়া হলো): নামাজের ধাপসমূহ নিয়ত করা মনে মনে যে নামাজ পড়বেন (যেমন ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা – ফরজ/সুন্নত/নফল) তা স্থির করতে হবে। মুখে উচ্চারণ করা ওয়াজিব নয়,
তবে বলা জায়েজ। উদাহরণ: “আমি দুই রাকাত ফজরের ফরজ নামাজ আদায় করার নিয়ত করছি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য। তাকবিরে তাহরিমা হাত কানে (পুরুষ) বা কাঁধ বরাবর (মহিলা) উঠিয়ে বলতে হবে: “আল্লাহু আকবর” এর মাধ্যমে নামাজ শুরু হয়।
কিয়াম (দাঁড়ানো) সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। প্রথমে পড়তে হবে সানা: سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلٰهَ غَيْرُكَ তিলাওয়াত আউযু ও বিসমিল্লাহ পড়া। সূরা ফাতিহা পড়া। এরপর কুরআনের অন্য কোনো সূরা বা আয়াত (কমপক্ষে তিন আয়াত বা একটি বড় আয়াত)।
রুকু “আল্লাহু আকবর” বলে রুকুতে যাওয়া। তিনবার পড়া: سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ (সুবহানা রব্বিয়াল আজীম)। রুকু থেকে উঠা সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। পড়বে: سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ দাঁড়িয়ে: رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ
সিজদাহ “আল্লাহু আকবর” বলে সিজদায় যাওয়া। তিনবার পড়বে: سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى (সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা)। সিজদায় সাত অঙ্গ মাটিতে স্পর্শ করতে হবে: কপাল, নাক, দুই হাত, দুই হাঁটু, দুই পায়ের আঙুল। জালসা (দুই সিজদার মাঝে বসা) “আল্লাহু আকবর” বলে বসবে। পড়তে হবে: رَبِّ اغْفِرْ لِيْ দ্বিতীয় সিজদাহ আগের মতো সিজদাহ করবে।
বাকি রাকাতসমূহ যদি নামাজ ৪ রাকাত হয় (যেমন জোহর, আসর, ইশা), তবে আবার দাঁড়িয়ে নামাজ চালিয়ে যেতে হবে। ৩ রাকাত মাগরিবে ৩য় রাকাতে উঠে পড়তে হবে। কা‘দায়ে আখিরা (শেষ বসা) তাশাহহুদ পড়বে। এরপর দরুদে ইব্রাহিম পড়বে। তারপর দোয়া পড়তে হবে, যেমন: رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
সালাম ফিরানো ডান দিকে মুখ ঘুরিয়ে: السلام عليكم ورحمة الله বাম দিকে মুখ ঘুরিয়ে: السلام عليكم ورحمة الله নামাজ শেষে ইস্তিগফার, দুরুদ, দোয়া পড়া। তাসবিহ: “সুবহানাল্লাহ” ৩৩ বার, “আলহামদুলিল্লাহ” ৩৩ বার, “আল্লাহু আকবর” ৩৪ বার।
নবীজির নামাজের নিয়ম
নবীজির নামাজের নিয়ম নবীজি ﷺ এর নামাজের নিয়ম হচ্ছে মুসলমানদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তিনি বলেছেনঃ “صلوا كما رأيتموني أصلي” অর্থাৎ: “তোমরা আমার মতোই নামাজ পড়ো যেভাবে আমাকে নামাজ পড়তে দেখেছো।” (বুখারী) নবীজির নামাজের ধাপে ধাপে নিয়ম এটি সাধারণভাবে ফরজ নামাজের জন্য:
নিয়ত করা মনে মনে আল্লাহর জন্য নামাজের নিয়ত করবেন। তাকবিরে তাহরিমা হাত দু’টো কানের লতি পর্যন্ত উঠিয়ে বলবেন “আল্লাহু আকবার”। হাত বুকের উপর রাখবেন (ডান হাত বাম হাতের উপর) কিয়াম (দাঁড়িয়ে কিরআত) সূরা ফাতিহা পড়বেন। তারপর কুরআনের অন্য কোনো সূরা বা আয়াত পড়বেন।
রুকু “আল্লাহু আকবার” বলে রুকুতে যাবেন। রুকুতে তিনবার বা তার বেশি “সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম” বলবেন। পিঠ ও মাথা সমান রাখবেন। রুকু থেকে ওঠা “সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলবেন। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে “রব্বানা লাকাল হামদ” বলবেন। সিজদাহ “আল্লাহু আকবার” বলে প্রথম সিজদায় যাবেন। নাক-মাথা, দুই হাত, দুই হাঁটু ও দুই পায়ের আঙুল মাটিতে লাগাবেন। তিনবার বা তার বেশি “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা” বলবেন।
সিজদাহ থেকে উঠা (জলসা) বসবেন এবং “রব্বিগফিরলি” বলবেন। দ্বিতীয় সিজদাহ আবার দ্বিতীয় সিজদাহ করবেন। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হবে। দ্বিতীয় রাকাত দাঁড়িয়ে আবার কিরআত করবেন (সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা)। তারপর রুকু, সিজদাহসহ আগের নিয়মে পড়বেন। পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম
দ্বিতীয় রাকাত শেষে তাশাহহুদে বসবেন এবং পড়বেনঃ “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি…” তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত সূরা ফাতিহা পড়বেন (তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে অতিরিক্ত সূরা পড়া সুন্নত নয় ফরজ নামাজে)। আগের মতো রুকু, সিজদাহ করবেন। শেষ বৈঠক (কায়দায়ে আখিরা) সবশেষ রাকাতের শেষে বসে পড়বেনঃ আত্তাহিয়্যাতু দরুদ ইবরাহিম দোয়া “রাব্বানা আতি’না” ইত্যাদি
নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস নামাজ পড়া ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। নামাজ কায়েম করার নিয়ম কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখানে আমি সহীহ হাদীসের আলোকে সংক্ষেপে নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম তুলে ধরছি:
নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম (সহীহ হাদীস অনুসারে) নিয়ত করা হৃদয়ে নিয়ত করতে হবে কোন নামাজ পড়ছেন (ফরজ/সুন্নত/ওয়াজিব)। মুখে উচ্চারণ করা আবশ্যক নয়। রাসূল ﷺ বলেছেন: "কাজসমূহ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।" (বুখারি ১, মুসলিম ১৯০৭) পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম
তাকবীরে তাহরীমা দাঁড়িয়ে হাত উঁচু করে বলা: "আল্লাহু আকবার" ইবন উমর (রা.) বলেন: রাসূল ﷺ নামাজ শুরু করার সময় হাত দু’টো কাঁধ বা কানের সমান তুলতেন। (বুখারি ৭৩৬, মুসলিম ৩৯০)
কিয়াম (দাঁড়িয়ে কুরআন তিলাওয়াত) সানা পড়বেন: "সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তা‘আলা জাদ্দুকা, ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।" (আবু দাউদ ৭৭৫) সূরা ফাতিহা পড়তে হবে প্রতিটি রাকাতে। (বুখারি ৭৫৬, মুসলিম ৩৯৪) ফাতিহার পরে অন্য কোনো সূরা বা আয়াত পড়তে হবে (প্রথম দুই রাকাতে)।
রুকূ হাত হাঁটুর উপর রেখে ঝুঁকবেন এবং বলবেন: "সুবহানা রব্বিয়াল আযীম।" (আবু দাউদ ৮৬৯, তিরমিযি ২৬২) রাসূল ﷺ রুকুতে মাথা ও পিঠ সমান রাখতেন। (বুখারি ৮২৮) রুকু থেকে ওঠা উঠার সময় বলা: "সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ" দাঁড়িয়ে বলা: "রাব্বানা লাকাল হাম্দ।" (বুখারি ৭৯৬, মুসলিম ৪১১)
সিজদা সিজদায় প্রথমে হাত, তারপর নাক-মাথা, হাঁটু ও পায়ের আঙ্গুল মাটিতে রাখতে হবে। (আবু দাউদ ৮৯৫) সিজদায় বলা: "সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা।" (মুসলিম ৪৭৯) সিজদা দীর্ঘ করা উত্তম। (বুখারি ৮১৬) দুই সিজদার মাঝে বসা হাঁটু মুড়ে বসবেন, বলবেন: "রাব্বিগফিরলি, রাব্বিগফিরলি।" (আবু দাউদ ৮৫০, তিরমিযি ২৮৪)
দ্বিতীয় রাকাতে একইভাবে দ্বিতীয় রাকাত শেষে তাশাহহুদে বসা। পড়বেন: "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি... আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু..." (বুখারি ৮৩১, মুসলিম ৪০২) দরূদ পড়া শেষ বৈঠকে নবীর উপর দরূদ পড়া ওয়াজিব। (বুখারি ৬৩৫৭, মুসলিম ৪০৫)
দুয়া ও সালাম দরূদ শেষে দোয়া পড়া সুন্নত। (মুসলিম ৪০৪) তারপর ডানে ও বামে সালাম ফিরানো: "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।" (আবু দাউদ ৯৯৬) এভাবে নামাজ শেষ হবে।
পুরুষের নামাজ পড়ার নিয়ম
পুরুষের নামাজ পড়ার নিয়ম ভাই, আলহামদুলিল্লাহ – পুরুষের নামাজ পড়ার নিয়ম কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে নির্ধারিত আছে। নারীদের নামাজে কিছু হালকা পার্থক্য থাকলেও পুরুষের নামাজের নিয়ম আলাদা। নিচে ধাপে ধাপে সহীহ হাদীসের আলোকে পুরুষের নামাজের নিয়ম দিচ্ছি:
পুরুষের নামাজ পড়ার নিয়ম (সহীহ হাদীস অনুযায়ী) পবিত্রতা ওজু ছাড়া নামাজ কবুল হয় না। (বুখারি ১৩৫, মুসলিম ২২৫) শরীর, কাপড় ও নামাজের স্থান পবিত্র হতে হবে। কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো নামাজ শুরুর আগে কিবলামুখী হয়ে সোজা দাঁড়াতে হবে। (বুখারি ৪০০, মুসলিম ৩৯৭)
তাকবীরে তাহরীমা হাত দু’টো কাঁধ বা কানের লতিতে উঠিয়ে বলা: "আল্লাহু আকবার" (বুখারি ৭৩৬, মুসলিম ৩৯০) হাত বাঁধা পুরুষরা ডান হাত বাম হাতের উপর বুকে রাখবেন। সাহাবা দিরার ইবনে দাহফাস (রহ.) বলেন: “তিনি (রাসূল ﷺ) বুকের উপর হাত রাখতেন।” (আবু দাউদ ৭৫৯, সহীহ আলবানী)
কিয়াম সানা পড়বেন: "সুবহানাকাল্লাহুম্মা..." (আবু দাউদ ৭৭৫) সূরা ফাতিহা পড়বেন। (বুখারি ৭৫৬, মুসলিম ৩৯৪) তারপর অন্য সূরা বা আয়াত পড়বেন। রুকু হাত হাঁটুর উপর রাখবেন, কনুই সোজা করবেন। মাথা ও পিঠ সমান রাখবেন, বাঁকানো বা নিচু নয়। বলবেন: "সুবহানা রব্বিয়াল আযীম" (আবু দাউদ ৮৬৯)
রুকু থেকে ওঠা উঠার সময় বলবেন: "সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ" দাঁড়িয়ে বলবেন: "রাব্বানা ওয়া লাকাল হাম্দ" (বুখারি ৭৯৬) সিজদা পুরুষরা সিজদার সময় হাত-পা ও কনুই ফাঁকা রাখবেন, যাতে শরীর পেটের সাথে লেগে না যায়। রাসূল ﷺ বলেছেন: “তোমরা সিজদায় শরীরের অঙ্গগুলোকে ফাঁকা রাখো।” (বুখারি ৮২২, মুসলিম ৪৯৩) সিজদায় বলবেন: "সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা" (মুসলিম ৪৭৯)
দরূদ ও দোয়া শেষ বৈঠকে দরূদে ইব্রাহিম পড়বেন। দোয়া করবেন: "আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা..." (মুসলিম ৪০৪) সালাম প্রথমে ডানে তারপর বামে তাকিয়ে বলবেন: "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ" (আবু দাউদ ৯৯৬) এভাবে পুরুষের নামাজ সম্পন্ন হবে। পার্থক্য হলো: পুরুষরা নামাজে সোজা দাঁড়াবে, রুকু ও সিজদায় অঙ্গ ফাঁকা রাখবে, এবং বুকের উপর হাত বাঁধবে।
মহিলাদের নামাজের নিয়ম
মহিলাদের নামাজের নিয়ম আলহামদুলিল্লাহ নামাজ নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ, তবে মহিলাদের নামাজের নিয়মে কিছু পার্থক্য আছে, যা সহীহ হাদীস ও সাহাবীদের আমল থেকে প্রমাণিত (মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম (সহীহ হাদীস অনুসারে)
পবিত্রতা নামাজের আগে ওযু / গোসল করে নিতে হবে। কাপড় ও শরীর পবিত্র হতে হবে। নারীর পুরো শরীর (মুখ ও হাত ছাড়া) ঢেকে রাখা ফরজ। (আবু দাউদ ৬৪০) কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো দাঁড়িয়ে নামাজ শুরু করতে হবে।
তাকবীরে তাহরীমা হাত কাঁধ পর্যন্ত বা কান পর্যন্ত উঠিয়ে বলতে হবে: “আল্লাহু আকবার।” (আবু দাউদ ৭৫৯) হাত বাঁধা পুরুষদের মতো বুকে নয়, বরং বুকের কাছাকাছি বা কিছুটা নিচে হাত বাঁধবেন। ডান হাত বাম হাতের উপর রাখবেন। পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম
কিয়াম (দাঁড়িয়ে কুরআন তিলাওয়াত) প্রথমে সানা পড়বেন: “সুবহানাকাল্লাহুম্মা…” (আবু দাউদ ৭৭৫) তারপর সূরা ফাতিহা পড়বেন। (বুখারি ৭৫৬) এরপর অন্য সূরা বা আয়াত পড়বেন। রুকু রুকুতে গিয়ে হাত হাঁটুর উপর রাখবেন। পুরুষদের মতো হাত টান টান করবেন না; বরং কনুই শরীরের সাথে মিলিয়ে রাখবেন। বলবেন: “সুবহানা রব্বিয়াল আযীম।” (আবু দাউদ ৮৬৯)
রুকু থেকে উঠা উঠার সময় বলবেন: “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” দাঁড়িয়ে বলবেন: “রাব্বানা লাকাল হাম্দ।” (বুখারি ৭৯৬) সিজদা নারীরা সিজদায় পুরুষদের মতো ফাঁকা রাখবেন না, বরং হাত, পেট ও পা শরীরের সাথে মিলিয়ে রাখবেন। ইবন আব্বাস (রা.) বলেন: “নারী নামাজে নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে একত্র করবে।” (বাইহাকি, সুনান ২/২২৩)
সিজদায় পড়বেন: “সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা।” (মুসলিম ৪৭৯) দুই সিজদার মাঝে বসা পুরুষদের মতো হাঁটু ছড়িয়ে নয়, বরং পাশে পা রেখে পুরো শরীর সঙ্কুচিতভাবে বসবেন। পড়বেন: “রাব্বিগফিরলি।” (আবু দাউদ ৮৫০)
তাশাহহুদ বৈঠকে বসে পড়বেন: “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি… আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু…” (মুসলিম ৪০২) নারীরা বসবেন উভয় পা একপাশে করে (তাওয়াররুক ভঙ্গিতে)। দরূদ ও দোয়া শেষ বৈঠকে দরূদে ইব্রাহিম পড়বেন। তারপর দোয়া করবেন। (মুসলিম ৪০৪) সালাম শেষে ডান ও বাম দিকে তাকিয়ে বলবেন: “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।” (আবু দাউদ ৯৯৬)
নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ
নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ আপনি নামাজের পূর্ণ নিয়ম ও দোয়া সমূহ জানতে চাইছেন। আমি এখানে ধাপে ধাপে নামাজের নিয়ম ও সাথে সাথে পড়ার দোয়াগুলো আরবী, উচ্চারণ ও অর্থসহ লিখে দিলাম।
নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ নিয়ত (نِيَّةٌ) নিয়ত মনে মনে করতে হয়। মুখে বলা জরুরি নয়। যেমন: “আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে আজকের (ফজর/যোহর/আসর/মাগরিব/ইশা) নামাজ ফরজ ২/৩/৪ রাকাত পড়ছি, কাবার দিকে মুখ করে, আল্লাহর জন্য।”
সানা / শুরু দোয়া (ثَنَاءٌ) سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلٰهَ غَيْرُكَ উচ্চারণ: সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা, ওয়া লা ইলা-হা গইরুক। অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র, তোমার প্রশংসা, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা মহান, তুমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই।
সূরা ফাতিহা (سُوۡرَةُ ٱلۡفَاتِحَةِ) بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ … وَلَا الضَّآلِّينَ (آمِين) (এই সূরা সব রাকাতে পড়তে হবে।) কুরআনের অন্য সূরা যেমন সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস ইত্যাদি। রুকু (رُكُوۡعٌ) রুকুতে যেতে হবে “আল্লাহু আকবার” বলে। রুকুতে দোয়া: سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ (৩ বার) উচ্চারণ: সুবহানা রব্বিয়াল আযীম অর্থ: মহামহিম আমার প্রভু পবিত্র।
রুকু থেকে ওঠা سَمِعَ اللّٰهُ لِمَنْ حَمِدَهُ উচ্চারণ: সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ। অর্থ: আল্লাহ শোনেন যিনি তাঁর প্রশংসা করে। দাঁড়িয়ে বলবে: رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য।
সিজদাহ (سُجُودٌ) সিজদাহতে পড়তে হবে: سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى (৩ বার) উচ্চারণ: সুবহানা রব্বিয়াল আ'লা অর্থ: সর্বোচ্চ আমার প্রভু পবিত্র। দুটি সিজদাহর মাঝে বসে পড়তে হবে: رَبِّ اغْفِرْ لِي অর্থ: হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর। কিয়াম/দ্বিতীয় রাকাত দ্বিতীয় রাকাতেও একইভাবে পড়তে হবে।
আত্তাহিয়্যাত (التَّحِيَّاتُ) দুই রাকাত বা চার রাকাত শেষে বসে পড়তে হয়: التَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللّٰهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেল আপনাদের সাথে আলোচনা মুখ্য বিষয় ছিল পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম সাথে আরো আলোচনা করেছি নবীজির নামাজের নিয়ম পরিপূর্ণ বিবরণ সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছে।
আজকের আর্টিকেলটি পরে আপনি কতটুকু উপকৃত হয়েছেন, এবং কোন কোন বিষয়গুলি আপনার ভালো লেগেছে আপনার নিকটস্থ বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষানীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন, আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
রোকন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url