*/
OrdinaryITPostAd

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সময়

 

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ এর সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না আর সঠিক তথ্য পেতে এবং এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা দেখতে আরো নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সময় এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সময় এর সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু জানতে নিচের আর্টিকেলগুলি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আশা করি এর সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু বুঝতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

প্রশ্নের উত্তর

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ

নরমাল ডেলিভারি (স্বাভাবিক প্রসব) শুরু হওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো দেখে বোঝা যায় যে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। নিচে প্রধান লক্ষণগুলো দেওয়া হলো গর্ভধারণের শেষ সময় (৩৭-৪০ সপ্তাহ) পূর্ণ হওয়া স্বাভাবিক ডেলিভারি সাধারণত গর্ভধারণের ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহের মধ্যে ঘটে।

পেটের নিচে চাপ অনুভব করা (baby dropping) শিশুটি নিচে নেমে আসে এবং মায়ের পেটের নিচের দিকে চাপ পড়ে। এতে শ্বাস নিতে সুবিধা হয় কিন্তু তলপেট ভারি লাগে। সত্যিকারের প্রসব বেদনা (True labor pain) বেদনা পিরিয়ডের মতো শুরু হয়, কিন্তু ধীরে ধীরে বেশি শক্তিশালী ও ঘন হয়ে ওঠে। 

প্রতি ৫-১০ মিনিট পরপর ব্যথা শুরু হয় এবং তা কয়েক সেকেন্ড থেকে মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। মিউকাস প্লাগ সরে যাওয়া (Bloody show) যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্ত মিশ্রিত আঠালো তরল বের হতে পারে, যেটি "মিউকাস প্লাগ" নামে পরিচিত। এটা জরায়ুর মুখ খুলতে শুরু করার ইঙ্গিত দেয়। 

জলের থলি ফেটে যাওয়া (Water breaking) হঠাৎ করে যোনি দিয়ে অনেকটা তরল বের হতে পারে। এটি "অ্যামনিয়টিক ফ্লুইড" এবং সাধারণত জল ফেটে যাওয়া বলে বোঝানো হয়। পিঠের নিচে ও তলপেটে ক্রমাগত ব্যথা পেছনের নিচের অংশ ও তলপেটে টান টান ব্যথা হতে পারে যা ধীরে ধীরে বাড়ে। 

জরায়ুর মুখ প্রসারণ (Cervical dilation) চিকিৎসক বা ধাত্রীর মাধ্যমে বোঝা যায় জরায়ুর মুখ কতটা প্রসারিত হয়েছে। সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার হলে ডেলিভারির সময় হয়ে যায়। আপনার যদি এই লক্ষণগুলোর কোনটি দেখা দেয়, বিশেষ করে ব্যথা নিয়মিত হয় বা পানি ভেঙে যায়, তাহলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া উচিত।

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সময়

নরমাল ডেলিভারি (স্বাভাবিক প্রসব) হওয়ার সময় বা পর্যায় কয়েকটি ধাপে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি ধাপে বিভিন্ন লক্ষণ ও পরিবর্তন দেখা যায়। নিচে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো জরায়ুর মুখ ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে (০ থেকে ৪ সেমি পর্যন্ত)। হালকা থেকে মাঝারি ব্যথা হয়, যা অনিয়মিত হয়। 

এই ধাপ ৬–১২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে। হালকা রক্ত মিশ্রিত মিউকাস বা "bloody show" দেখা দিতে পারে। জরায়ুর মুখ দ্রুত প্রসারিত হয় (৪ থেকে ১০ সেমি পর্যন্ত)। ব্যথা নিয়মিত, ঘন এবং আরও তীব্র হয় – সাধারণত প্রতি ৩-৫ মিনিটে একবার। এই ধাপ ৪–৮ ঘণ্টা বা তার চেয়েও বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে।

বিশেষ করে প্রথমবারের জন্য। পুশ করার ধাপ (Delivery of the Baby) জরায়ুর মুখ ১০ সেমি পুরোপুরি প্রসারিত হলে শুরু হয়। মা তখন ডাক্তার বা ধাত্রীর নির্দেশে পুশ করেন। শিশুর মাথা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে (crowning) এবং এরপর শরীর। এই ধাপ সাধারণত ২০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

প্ল্যাসেন্টা বের হওয়া (Delivery of the Placenta) শিশুর জন্মের পর ৫–৩০ মিনিটের মধ্যে প্ল্যাসেন্টা (জরায়ুর ভিতরের অংশ) বের হয়ে আসে। হালকা ব্যথা বা টান অনুভব হতে পারে। মোট সময়: প্রথমবার মা হলে: সাধারণত ১২–২৪ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। আগেও ডেলিভারি হয়ে থাকলে: সময় কিছুটা কম হতে পারে, প্রায় ৬–১২ ঘণ্টা। যদি আপনার প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসে বা ব্যথা নিয়মিত হয়, তবে দেরি না করে হাসপাতালে যাওয়া উচিত।

নরমাল ডেলিভারি ব্যাথা কেমন

নরমাল ডেলিভারির ব্যথা অনেকটা পিরিয়ডের ব্যথার মতো শুরু হয়, কিন্তু তা সময়ের সঙ্গে অনেক বেশি তীব্র, গভীর এবং নিয়মিত হয়। এই ব্যথা শরীরের নিচের অংশে, বিশেষ করে তলপেট, পিঠের নিচের অংশ, এবং মাঝে মাঝে উরু পর্যন্ত অনুভূত হয়। নরমাল ডেলিভারি ব্যথার প্রকৃতি কেমন?

পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো শুরু হয় প্রথমে হালকা টান বা ব্যথা হয়। অনেক সময় নারীরা মনে করেন এটি গ্যাস বা সাধারণ পেট ব্যথা। ধীরে ধীরে ব্যথা তীব্র হয় ব্যথা নিয়মিত হয়, প্রথমে ১৫ ২০ মিনিট পরপর, পরে ৫ মিনিট বা তারও কম ব্যবধানে। প্রতিটি ব্যথা সাধারণত ৩০–৭০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়।

নিচের পিঠে ও তলপেটে টান টান ব্যথা অনেক সময় ব্যথা পেছনের নিচের অংশ থেকে শুরু হয়ে তলপেটে নামে। চাপ অনুভব হয় শিশুটি নিচে নামতে থাকায় যোনিপথে ও পায়ুপথে চাপ অনুভূত হয়। মনে হতে পারে টয়লেটের চাপ এসেছে। শেষের দিকে ব্যথা সবচেয়ে তীব্র হয় (Transition phase) ব্যথা খুবই ঘন ও শক্তিশালী হয়, মা ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

অনেক নারী বলেন, এটি জীবনের সবচেয়ে ব্যথাদায়ক সময়, কিন্তু এটি অল্প সময়ের জন্য হয়। ভয়ের কিছু নেই প্রতিটি নারীর ব্যথা অনুভব করার ক্ষমতা আলাদা। চিকিৎসক বা ধাত্রী ব্যথা সহ্য করার জন্য বিভিন্ন সহায়তা দিতে পারেন (যেমন: শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম, ওষুধ, পানি থেরাপি, ইপিডুরাল ইত্যাদি)।

গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলার লক্ষণ

গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ (cervix) খোলা বা প্রসারণ শুরু হওয়া মানে আপনার দেহ ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এটি প্রসবের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এবং বেশ কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যায় জরায়ুর মুখ খুলতে শুরু করেছে। জরায়ু মুখ খোলার (Cervical dilation) লক্ষণগুলো:

মিউকাস প্লাগ বের হওয়া (Bloody Show) আঠালো ও রক্ত-মিশ্রিত তরল যোনি দিয়ে বের হতে পারে। এটি জরায়ুর মুখ নরম হয়ে খুলতে শুরু করার প্রথম লক্ষণ। তলপেটে ও পিঠে চাপ বা ব্যথা নিচের পিঠে ও তলপেটে ক্রমাগত ব্যথা বা টান অনুভব হতে পারে। ব্যথাগুলো নিয়মিত হলে তা জরায়ুর মুখ খোলার ইঙ্গিত হতে পারে।

প্রসব ব্যথা (Labor Contractions) প্রকৃত ব্যথা নিয়মিত হয়, সময়ের সঙ্গে তীব্রতা বাড়ে। এটি জরায়ুর মুখ প্রসারিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। জল ভেঙে যাওয়া (Water Breaking) অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইড বের হয়ে গেলে সাধারণত জরায়ুর মুখ খোলা শুরু হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

ডাক্তার বা ধাত্রী আঙুল দিয়ে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা করে বলেন জরায়ুর মুখ কত সেন্টিমিটার খোলা (০ থেকে ১০ সেমি পর্যন্ত)। ১০ সেমি হলে পূর্ণ প্রসারণ এবং ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত। তলপেটে “নামার” অনুভব (Lightening or baby dropping) বাচ্চা নিচে নামতে শুরু করে, তখন প্রস্রাবের চাপ বা ভারি অনুভব হয়। জরায়ুর মুখ খোলা থাকলেও অনেক সময় ব্যথা নাও হতে পারে, তাই নিয়মিত ডাক্তারি চেকআপ খুবই জরুরি।

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয়

নরমাল ডেলিভারি (স্বাভাবিক প্রসব) হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে গর্ভাবস্থায় কিছু বিশেষ যত্ন ও প্রস্তুতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিচে নরমাল ডেলিভারির জন্য করণীয় কাজগুলো ধাপে ধাপে দেওয়া হলো সঠিক খাদ্য ও পুষ্টি বজায় রাখা পর্যাপ্ত আয়রন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া।

দিনে প্রচুর পানি পান করা (৮–১০ গ্লাস)। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও জাঙ্ক ফুড পরিহার করা। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম ও হাঁটা গর্ভবতী নারীদের জন্য উপযোগী ব্যায়াম যেমন: হাঁটা কেজেল এক্সারসাইজ (Kegel) স্কোয়াট (Squat) — যদি ডাক্তার অনুমতি দেন ব্যায়াম পেটের পেশি ও জরায়ুকে প্রস্তুত করে।

মানসিক প্রশান্তি ও ইতিবাচক মনোভাব রাখা দুশ্চিন্তা কমাতে ধ্যান (meditation), প্রার্থনা বা গান শুনতে পারেন। পরিবারের সাপোর্ট এবং ভালো পরিবেশ থাকা জরুরি। সঠিক ঘুম ও বিশ্রাম প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। ডান কাত হয়ে শোয়া (বিশেষ করে বাম পাশে) রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

গর্ভকালীন নিয়মিত চেকআপ নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ড ও ব্লাড প্রেশার/সুগার পরীক্ষা করান। যদি কোনো জটিলতা (যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া) না থাকে, তাহলে নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেশি। প্রসব প্রস্তুতির প্রশিক্ষণ বা ক্লাসে যোগ দেওয়া (Antenatal class) সেখানে প্রসব ব্যথা, শ্বাস-প্রশ্বাস কৌশল, ও পুশ করার পদ্ধতি শেখানো হয়। 

প্রসবের সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ব্যথা শুরু হলে হঠাৎ আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকা। যথাসময়ে হাসপাতালে যাওয়া। প্রয়োজন ছাড়া সিজারিয়ান চাওয়া বা চাপ না দেওয়া অনেকে ভয় বা ভুল ধারণায় অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান চান – এটা এড়ানো উচিত। যা করা উচিত নয় অতিরিক্ত কাজ বা ভারী জিনিস তোলা। ধূমপান বা এলকোহল গ্রহণ। নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ খাওয়া।

প্রসবের কিছুদিন আগের লক্ষণ

প্রসবের (ডেলিভারির) কয়েকদিন বা ১–২ সপ্তাহ আগে শরীরে কিছু স্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে, যেগুলো ইঙ্গিত দেয় যে বাচ্চা জন্মানোর সময় কাছাকাছি। এই লক্ষণগুলো সবাইর ক্ষেত্রে একরকম হয় না, তবে সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়:

প্রসবের কিছুদিন আগের সাধারণ লক্ষণ: বাচ্চা নিচে নেমে আসা (Baby dropping / Lightening) পেট নিচের দিকে নেমে আসে। বুক হালকা লাগে, কিন্তু তলপেটে ভারি চাপ অনুভব হয়। প্রস্রাবের চাপ বাড়ে। পেটে ও কোমরে চাপ বা ব্যথা হালকা বা মাঝারি ব্যথা শুরু হতে পারে তলপেটে ও কোমরের নিচে।

অনেকটা পিরিয়ডের সময়ের ব্যথার মতো। মিউকাস প্লাগ বা রক্তমিশ্রিত স্রাব বের হওয়া (Bloody Show) ঘন, আঠালো সাদা বা হালকা লালচে রঙের স্রাব যোনি দিয়ে বের হতে পারে। এটি জরায়ুর মুখ খোলা শুরু হওয়ার লক্ষণ। শারীরিক ক্লান্তি বা হঠাৎ শক্তি ফিরে আসা অনেক নারী হঠাৎ খুব ক্লান্ত বোধ করেন।

আবার কেউ কেউ হঠাৎ করে ঘর গোছানো বা প্রস্তুতি নেওয়ার শক্তি ও আগ্রহ পান (nesting instinct)। পেটের নিচে চাপ ও ভারী অনুভব বাচ্চা নিচে নামার ফলে তলপেটে কষ্ট হয় এবং হাঁটাচলায় অস্বস্তি হতে পারে। হজম সমস্যা বা পাতলা পায়খানা হরমোনের কারণে কিছু মায়েদের হালকা বমিভাব বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

অনিয়মিত ব্র্যাকস্টন হিকস (Braxton Hicks) সংকোচন এটা মিথ্যা ব্যথা, অনিয়মিত ও হালকা হয়। ধীরে ধীরে প্রকৃত ব্যথায় রূপ নিতে পারে। যখন সতর্ক হবেন: নিয়মিত ও তীব্র ব্যথা শুরু হলে (প্রতি ৫-১০ মিনিট পরপর)। পানি ভেঙে গেলে। রক্তপাত বেশি হলে। এই লক্ষণগুলো সাধারণত প্রসবের ১–৭ দিন আগে দেখা যেতে পারে, তবে সময় ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়।

৯ম মাসে স্বাভাবিক প্রসবের লক্ষণ

৯ম মাসে (৩৬-৪০ সপ্তাহে) গর্ভবতী মায়েদের শরীরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যা স্বাভাবিক (নরমাল) প্রসব শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এই লক্ষণগুলো দেখে বোঝা যায়, আপনার শরীর ধীরে ধীরে ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। ৯ম মাসে স্বাভাবিক প্রসবের লক্ষণসমূহ:

বাচ্চা নিচে নেমে আসা (Baby Dropping / Lightening) পেট নিচের দিকে নেমে আসে। বুক হালকা লাগে, কিন্তু তলপেটে ও প্রস্রাবে চাপ বাড়ে। হাঁটা ও বসা কিছুটা কষ্টকর লাগে। প্রসব ব্যথা শুরু হওয়া (True Labor Pain) ব্যথা প্রথমে অনিয়মিত থাকে, ধীরে ধীরে নিয়মিত ও তীব্র হয়। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

ব্যথা পিঠের নিচ থেকে শুরু হয়ে তলপেট ও উরু পর্যন্ত ছড়াতে পারে। প্রতিটি সংকোচনের (contraction) ব্যবধান কমে আসে (প্রতি ৫-১০ মিনিটে একবার)। মিউকাস প্লাগ বের হওয়া (Bloody Show) যোনি দিয়ে আঠালো সাদা বা হালকা রক্তমিশ্রিত স্রাব বের হতে পারে। এটি জরায়ুর মুখ খুলতে শুরু করার লক্ষণ।

জলের থলি ফেটে যাওয়া (Water Breaking) যোনি দিয়ে স্বচ্ছ তরল বের হয় — এটি অ্যামনিয়টিক ফ্লুইড। ব্যথা শুরু হোক বা না হোক, এটা সত্যিকারের প্রসবের খুব কাছাকাছি অবস্থান নির্দেশ করে। জরায়ুর মুখ ধীরে ধীরে খুলতে থাকা (Cervical Dilation) ডাক্তার বা ধাত্রী পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝতে পারেন জরায়ুর মুখ কতটা খোলা (সাধারণত ০ থেকে ১০ সেমি পর্যন্ত)।

তলপেটে ভারী টান এবং পিঠে ব্যথা অনেক সময় ব্যথা পিরিয়ডের মতো লাগে। শরীরে ভারী টান এবং নিচে চাপ অনুভূত হয়। বমিভাব, পাতলা পায়খানা, হজমের পরিবর্তন হরমোনের কারণে অনেক সময় পেট খারাপ বা বমি হতে পারে। মনে রাখবেন: 

এই লক্ষণগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে বা সন্দেহ হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। নিয়মিত চেকআপ এবং ডাক্তারি পরামর্শ মেনে চলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

নরমাল ডেলিভারি কত দিনে হয়

নরমাল ডেলিভারি (স্বাভাবিক প্রসব) সাধারণত গর্ভধারণের ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ (বা ৯ম মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত) সময়ের মধ্যে হয়ে থাকে। তবে এটি একেবারে নির্দিষ্ট দিনে হয় না — ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। নরমাল ডেলিভারির সময়সীমা (গড় হিসেব): মা সাধারণত ডেলিভারি হয়।

প্রথমবার মা হচ্ছেন ৩৮–৪১ সপ্তাহের মধ্যে আগেও সন্তান জন্ম দিয়েছেন ৩৭–৪০ সপ্তাহের মধ্যে গণনার নিয়ম: গর্ভাবস্থার সময় গণনা করা হয় শেষ মাসিকের (LMP) প্রথম দিন থেকে। সাধারণত ৪০ সপ্তাহ বা ২৮০ দিন পর ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ (EDD – Estimated Due Date) নির্ধারণ করা হয়।

সময় পার হলেও নরমাল ডেলিভারি হতে পারে: অনেক মায়ের ক্ষেত্রে ৪০ সপ্তাহ পার হয়ে ৪১ সপ্তাহে ডেলিভারি হয়। তবে ৪২ সপ্তাহের বেশি হয়ে গেলে ডাক্তার সাধারণত ইনডাকশন বা অন্য পদ্ধতির পরামর্শ দেন। নিয়মিত লক্ষণ পর্যবেক্ষণ ও ডাক্তারি চেকআপে থাকা জরুরি, যেন ডেলিভারি কখন শুরু হচ্ছে তা ঠিক সময়ে ধরা যায়। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ।

লেখক এর মতামত

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেল আপনাদের সাথে আলোচনা মুখ্য বিষয় ছিল নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সাথে আরো আলোচনা করেছি নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সময় পরিপূর্ণ বিবরণ সম্বন্ধে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছে।

আজকের আর্টিকেলটি পরে আপনি কতটুকু উপকৃত হয়েছেন, এবং কোন কোন বিষয়গুলি আপনার ভালো লেগেছে আপনার নিকটস্থ বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষানীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন, আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

কত সপ্তাহে জরায়ুর মুখ খুলে?

উত্তরঃ জরায়ুর মুখ (cervix) সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে, অর্থাৎ ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহের মধ্যে ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে, যা স্বাভাবিক (নরমাল) প্রসবের প্রস্তুতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। জরায়ুর মুখ কখন ও কিভাবে খুলে: ৩৬–৩৭ সপ্তাহ: জরায়ুর মুখ (cervix) নরম হতে শুরু করে (effacement) এবং অল্প অল্প করে খুলে (dilate) যেতে পারে।

কিছু মায়েদের ক্ষেত্রে এই সময়ে ১–২ সেমি পর্যন্ত খোলা থাকে, ব্যথা ছাড়াও। ৩৮–৪০ সপ্তাহ: জরায়ুর মুখ আরও বেশি নরম ও প্রসারিত হয়। ধীরে ধীরে ৩–৪ সেমি পর্যন্ত খোলার সম্ভাবনা থাকে। প্রসব শুরুর সময়: সত্যিকারের প্রসব ব্যথা শুরু হলে জরায়ুর মুখ দ্রুত খোলে। সম্পূর্ণ প্রসবের জন্য জরায়ুর মুখ ১০ সেমি পর্যন্ত খুলতে হয়। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: কারও ক্ষেত্রে জরায়ুর মুখ ১–২ সেমি খোলা থাকলেও ব্যথা শুরু নাও হতে পারে। আবার কারও ক্ষেত্রে ব্যথা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত খোলা শুরু হয়। প্রসবের অগ্রগতি ডাক্তার অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন।

স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের সময়কাল কত?

উত্তরঃ স্বাভাবিক (নরমাল) সন্তান প্রসবের সময়কাল মায়ের অভিজ্ঞতা, শরীরের অবস্থা ও সন্তানের অবস্থান ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণভাবে নরমাল ডেলিভারিকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়, এবং প্রতিটি পর্যায়ের জন্য গড় সময় নিচে দেওয়া হলো: স্বাভাবিক ডেলিভারির সময়কাল:

১ম পর্যায়: জরায়ুর মুখ খোলার সময় (Cervical dilation) সময়: প্রথম সন্তান হলে ৮–১২ ঘণ্টা পর্যন্ত, পরবর্তী সন্তান হলে 5–8 ঘণ্টা। কি হয়: জরায়ুর মুখ ধীরে ধীরে ১০ সেমি পর্যন্ত খুলে যায়। শুরুতে ব্যথা হালকা থাকে, ধীরে ধীরে ঘন ও তীব্র হয়।

২য় পর্যায়: শিশুর জন্ম (Pushing & Delivery) সময়: প্রথম সন্তান হলে ৩০ মিনিট – ২ ঘণ্টা পর্যন্ত, পরে হলে ২০–৪৫ মিনিট। কি হয়: মা ব্যথার সময় পুশ দেন এবং শিশুটি জন্ম নেয়। সবচেয়ে শক্তি ও মনোযোগের দরকার হয় এই সময়।

৩য় পর্যায়: অমরাশয় (প্লাসেন্টা) বের হওয়া সময়: সাধারণত ৫–৩০ মিনিট। কি হয়: বাচ্চা জন্মের পর জরায়ু সংকুচিত হয়ে প্লাসেন্টা বাইরে আসে।

মোট সময়: প্রথম সন্তান: ১২–১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় সন্তান: অনেক সময় ৬–১০ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। জটিলতা ছাড়া, স্বাভাবিক ডেলিভারির সময় সাধারণত দীর্ঘ হলেও এটি নিরাপদ ও শরীরের জন্য উপকারী।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রোকন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url